Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

এক নজরে অফিস

খামারের পটভূমি :

চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মানুষের দারিদ্র বিমোচন তথা আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য ১৯৮৪ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার উপররাজারামপুর নামক স্থানে ২.৮৬ একর জমির উপর নির্মিত হয় সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ । শুরুতে এখানে বিভিন্ন বয়সী হোয়াইট লেগ হর্ন, রোড আইল্যান্ড রেড (RIR), ফাওমি জাতের মুরগি পালন করা হতো। পরে দেশের পোল্ট্রি খামারীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে আরআইআর এর সাথে ফাউমির ক্রস করার ফলে  সোনালি জাতের মুরগি তৈরী ও  পালন করা হতো। পরবর্তী দেশের বেসরকারী পোল্ট্রি শিল্প প্রসার ঘটার কারনে খামারটি দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচীর আওতায় দরিদ্র কৃষকদের ১৪- ৮০ দিন বয়সের ফাউমি, সোনালি ও আর. আই. আর জাতের মুরগি বাচ্চা সরকার নির্ধারিত মুল্যে সরবরাহ দেওয়া শুরু করে।


 খামারের সাধারণ তথ্যাবলী :

১। স্থাপিত: ১৯৮৪ সাল

২। আয়তন: ২.৮৬ একর

৩। কর্মকর্তার স্থায়ী পদ: ০৩ টি  (কর্মরত-০২ জন)

৪। কর্মচারীর স্থায়ী পদ: ৬ টি  (কর্মরত-০৪ জন)

৫। স্থাপনা সমূহ

ক) অফিস ভবন: ০২টি

খ) ব্রুডার হাউজ কাম শেড ০১ টি

ঙ) খাদ্য গুদাম: ০১ টি


ফাউমি জাতের মুরগির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :

 ফাউমি মুরগি প্রাচিন মিশরে উৎপন্ন একটি সক্রিয় এবং শক্ত জাতের মুরগি। এটি একটি সত্যিকারের প্রাচীন মুরগীর জাত এবং  কয়েক শতাব্দী ধরে এই জাতটি মিসরে নদ-নদীর আশেপাশে পালিত হয়ে আসছে। এদের নামকরণ করা হয় কায়রো এবং পশ্চিম নদের দক্ষিণ-পশ্চিমে ’ফাইইয়াম’ নামক প্রদেশ থেকে । মিশরীয়রা এই জাতটিকে খৃষ্টপূর্ব সাল থেকে পালন করে আসছে। ফাওমি  জাতের মুরগি সর্ব প্রথম  ১৯৪০ সালে আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Iowa) এক অধ্যাপকের মাধ্যমে পশ্চিমে আমদানি করা হয়। কিন্তু তখনই এ জাতটিকে  আমেরিকান পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের স্টান্ডার্ড অব পার্ফেশন (American Poultry Associations Standard of Perfection) অন্তভুর্ক্ত করা হয়নি।

ফাওমি  মুরগি বন-মুরগির হাইব্রিড বংশধর হিসাবে গণ্য করা হয়, যা গৃহপালিত পাখির সাথে প্রজনন ঘটায়। ধারণা করা  হয়, মিশরের কাঁটাযুক্ত পাম ( Palm বা খেজুর) বন এবং জলাভূমি থেকে (প্রায় ৩,০০০ বছর আগে) অভিযোজিত হয়েছে। এটা মিশরে একটি খুব সাধারণ এবং  জনপ্রিয় মুরগি জাত এবং এরা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

ফাউমি মুরগির বৈশিষ্ট্য :

 ফাওমি মুরগি বড় ঘনকালো চোখ এবং উচু লেজ বিশিষ্ট এবং ছোট আকারের। কখনও কখনও এরা তাদের  এগিয়ে থাকা থাকা  বুক ও  ঘাড় এবং সোজা উপরে থাকা লেজ একটি রোডরানার (কোকিল গোত্রের একটি সরল দ্রুতগামী পাখি, যা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে মধ্য আমেরিকা পর্যন্ত শুষ্ক দেশে পাওয়া যায় এমন মুরগি সাথে তুলনা করা হয়। এটি একটি হালকা জাতের মুরগি হিসেবে এককভাবে দেখা যায়। ফাওমি মুরগি নীলভ কালো পা, লাল রঙের কানের লতি  এবং একটি একক মাঝারি ঝুঁটি আছে। তাদের কানের লতির মধ্যে সাদা সাদা স্পট আছে। ফাওমি মুরগির চামড়ার রঙ নীল স্লেট। এইম মুরগি  সিলভার-সাদা রঙ ঘাড় এবং কালো কালো ছোপের পালকে ঢাকা সারা শরীর। ফাওমি বেশ ভাল ডিম দেয়া মুরগির জাত হিসেবে খ্যাত।


এরা ছোট আকারের সাদা রঙের ডিম দেয় এবং সাধারনত এদের দিয়ে ডিমে তা দেওয়া হয়না। কিন্তু বয়স দুই বছর হলে ডিমে তা দেয়ার প্রবনতা দেখা দিতে পারে। ফাওমি মুরগি  অবিশ্বাস্যভাবে রোগ প্রতিরোধী যা তা এদের ব্যাকটেরিরা বা ভাইরাসের দ্বারা কার্যত অবিচ্ছিন্ন হওয়ার খ্যাতি আছে। ফাওমি  মারেক্স এবং অন্যান্য অনেক অসুস্থতার জন্য স্বাভাবিকভাবেই প্রতিরোধী বলে পরিচিত। ফাওমি মুরগির দ্রুত ম্যাচুরিটি আসে । ককরেলগুলি অবিশ্বাস্যভাবে পাঁচ বা ছয় সপ্তাহের মধ্যেই ডাক দেয়া শুরু করে, এবং মুরগি সাড়ে ৪ বা ৫ মাসের মধ্যে ডিম দেয়া শুরু করে। । গড়ে একটি মোরগ প্রায় ১.৮ কেজি ও একটি মুরগি ওজন প্রায় ১.৫ কেজি  হয়। সিলভার পেন্সিল(Silver penciled) ফাওমি মুরগি সবচেয়ে পরিচিত এবং একমাত্র ফাউমির জাত।

আচরণ / মেজাজ:  

ফাউমি মুরগি উষ্ণ জলবায়ুতে বিশেষভাবে উপযুক্ত, খুবই সক্রিয় ও শক্ত প্রজাতির হয়। বেঁচে থাকার খুব সামান্য ফিড বা খাদ্য প্রয়োজন হয়। সুতরাং এরা খুব লাভজনক এক প্রজননক্ষম মুরগির জাত। ফাউমি মুরগি খুব রেগে যায, যখন এদের হাত দিয়ে ধরা হয় বা আঘাত করা হয়। এ কারণে এরা সব সময় পোষ মানা পছন্দ করেনা। এরা সম্পুর্ণরূপে পোষ মানেনা, যদিও এদেরকে বিভিন্ন উপায়ে পোষ মানিয়ে রাখা হয়। এরা খুবই প্রাণবন্ত পাখি, খুব উড়াউড়ি করে এবং গাছ গাছালি খুব পছন্দ করে । তাই যত্নের সাথে সীমানা বা বেড়া দেওয়া প্রয়োজন হয়। ফাউমি  মুরগি সামান্য আগ্রাসী কিন্তু এরা হিংস্র নয় বা বিশেষ আক্রমনাত্মক না এবং মোরগগুলি একে অপরের প্রতি সহনশীল হয়। ডিম পাড়া মুরগি দিয়ে সাধারণত ডিমে তা দেয়া হয়না, কিন্তু  বয়স দুই বছরের অধিক হলে ডিমে তা দেয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। এদের ডিম  ইনকুবেটর মেশিন দিয়ে ফুটানো যায় বা ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা উৎপাদন করা যায়। ফাউমি মুরগি খুব কঠোর পরিশ্রমী এবং খোলা সিস্টেমে পালনের জন্য ভালো। এরা ছোট বা ক্ষুদ্র খামারে প্রজননের জন্য খুব উপযুক্ত। ফাউমি মুরগি বছরে প্রায় ২৫০-২৬০ টি ডিম দেয়।

আর.আই.আর জাতের মোরগ-মুরগির বৈশিষ্ট্য 

‘রোড-আইল্যান্ড-রেড’ বা ‘আর-আই-আর’ মুরগি তুলনামূলকভাবে শক্তপোক্ত ও রাগি। সম্ভবত তারা ‘দ্বৈত-উদ্দেশ্য’ পালনের জন্য সেরা ডিমের মুরগি। বাড়ির উঠান বা ছোট খামারিদের জন্য এরা সবচেয়ে ভাল পছন্দ। এরা অন্যান্য যে কোন জাতের তুলনায় খারাপ অবস্থায়ও ডিম উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে এদেরকে প্রান্তিক খাদ্যেও পালা যায়।

এরা দেখতে কিছুটা আয়তক্ষেত্রাকার, অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ দেহ এবং সাধারণত গাঢ় লাল রঙের হয়ে থাকে। এদের লাল-কমলা চোখ, লাল-বাদামী ঝুটি রয়েছে। এদের পা এবং নখগুলি হলুদ (প্রায়শই পায়ের পায়ের আঙ্গুলের এবং পায়ের পাশে লাল রংয়ের সাথে)। পাখির পালকগুলি মরিচা রঙের,তবে গাঢ় ছায়াগুলি কালো। RIR লাল ইটের রঙের মত। সাধারণত, মোরগের ওজন প্রায় ৩.৫ কেজি এবং মুরগীর ওজন প্রায় ২.৫ কেজি। RIR মুরগি চঞ্চল, নমনিয় কিন্ত শান্ত প্রকৃতির। অন্য জাতের মুরগির সাথে এর বন্ধুত্বপূর্ন আচরণ করে। তবে মাঝে মাঝে মোরগগুলি একটু-আধাটু আক্রমণাত্মক হতে পারে। এই জাতের মুরগি বদ্ধ (ফার্ম) ও খোলা, উভয় পরিবেশেই পালনের উপযুক্ত। 


সোনালি মুরগি :

আর.আই.আর মোরগ ও ফাউমি মুরগির মধ্যে সংকরায়নের মাধ্যমে সোনালি জাতের মুরগির সৃষ্টি হয়েছে। এটি একটি সংকর জাতের দেশী মুরগি। অনেকে একে দেশি জাতের মুরগি বলে মনে করে। সোনালি মুরগি সব আবহাওয়ার জন্য উপযোগি। উত্তর বঙ্গে বিশেষ করে জয়পুরহাট, বগুড়া, নওগা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি সোনালি পালন করা হয়।


সোনালি মুরগির বৈশিষ্ট্যাবলী :

এদের রোগ বালাই কম হয়।

আমাদের দেশি আবহাওয়ায় সহজে খাপ খাওয়াতে পারে।

দৈহিক ওজন ২-২.৫ কেজি।

এরা খুবই চালাক এবং চরে খেতে অভ্যস্ত।

বছরে  ২০০-২৫০ টি ডিম দেয়।

ডিমের ওজন ৪০-৫০ গ্রাম।